গল্পের ঝুড়ি: পর্ব-৩

avatar

source


তিন মাস পরে হঠাৎ ই বড় আপার আগমন বাড়িতে। সারাদিনে তেমন কথাবার্তা না হলে ও রাতে খাবারের সময় দাদা বলেন যে, ঐ বাড়ির সবাই সন্দেহ করছে যে নোট টা তোরাই নিছিস।তাই সেটা তারা ফেরত চাচ্ছে! অহ বলা হয়নি তোকে,দাদারা বাড়ি ফিরে,সবাইকে এটাই বলে বেড়িয়েছে যে, নোট অচল, তাই এটা দিয়ে কিছু হবে না।পরে এসে যেন নিয়ে যায়।তারাও এটাই বিশ্বাস করেছে।এবং পরে আস্তে আস্তে তাদের প্রবল ভাবে সন্দেহ বাড়তে থাকে।যার ফলাফল হিসেবে, বড় আপাকে আমাদের বাড়িতে পাঠানো। আপা আসলেই সবটাই জানতেন। দাদাকে তিনি নিজ থেকেই বলেন যে,"তুই বলবি, তোর ক্যাশ বাক্সটা চুরি হয়ে গেছে!এবং নোট টা সেখানেই ছিলো"! এটা জানিয়ে আপা পরেরদিন ই চলে গেল।

দাদা ও বাধ্য ছেলের মতোই আপার কথা মত কাজ করল।সবাই এটাই জানালো যে, ক্যাশ বাক্স চুরি জনিত কারনে নোটটি এই মুহূর্তে দেয়া সম্ভব না।এতে তাদের মনের সন্দেহ তো কমেই না, যার জন্য আপাদের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকল।


ঐদিকে তো ভাইজান আছে তার গণক নিয়ে।এই গণক বলে মাটির নিচে কাগজ পুতে রাখতে তো অন্যজন বলে ২০০ গজ দক্ষিণ বাড়ির মালিক নিছে।সে এক হযবরল অবস্থা। কিন্তু কেনো জানি ভাইজান হালই ছাড়ছে না।একদিন ভরদুপুরে বাড়ি এলেন,এসে আমাকে জোরে একটা ডাক দিলেন! আমি একটু অবাক হয়েই দৌড়ে গেলাম।তো বলতে লাগলেন,শোন রানু আজকে ভোলা যাব,ওই গণকের নাকি নাম -ডাক আছে। গিয়ে দেখি কি অবস্থা। না হইলে নাই।আমি বললাম,আপনার ধৈর্য্য আছে ভাইজান! আমি হইলে কখনোই পারতাম না!

যেই বলা, সেই কাজ! যথারীতি ভোলায় গিয়ে উপস্থিত। সেখানে সেই লোকের চেহারা বা বাহ্যিক অবস্থা কিছুই কেন জানি পছন্দ হয় না ভাইজানের।কিন্তু যখন গণক তার সামনা-সামনি এলো হঠাৎ নাকি গালাগালি করা শুরু করল,সাময়িক ধাক্কায় নিজেকে সামলে নিয়ে, বলা শুরু করলেন নোট নিয়ে কাহিনী। গণক মাঝ কথায় থামিয়ে, বলেন যে কেন ভাইজান এত দেরিতে এখানে এসেছে? এই দিনার নাকি কোন সাধারণ দিনার না। এটা কোন মানুষের না!এটা দুষ্ট জ্বীনের কারসাজি


কি? ব্যাপার শুনে অদ্ভুত লাগছে নারে?আমরাও প্রথমে বিশ্বাস করিনি একদমই! ভেবেছিলাম ভাইজান এর মতো মানুষকে কিভাবে এত বোকা বানায়?তো ওই গণক নাকি বলেছে,আরো একমাস আগে আসলে, সে হাতে হাতেই দিনারটা দিতে পারতো! তবে এখনো চেষ্টা করলে পাওয়া যাবে! তবে একটাই শর্ত! যে দিনার টা খুজে পেয়েছিল, তার হাতে দিয়ে দিতে হবে,কারন এই দিনার কখনোই ভাঙানো যাবে না এবং এক সপ্তাহের বেশী এটি থাকবেও না!তাছাড়া এই তিন মাসে ৫/৬ টা পরিবারে চরম অশান্তি তৈরী করেছে!ভাইজান তাতেই রাজি হয়ে যান।

আর উনি যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, তা করার জন্যে প্রস্তুতি নিতে থাকেন।প্রস্তুতির প্রথম শর্ত, যেই বাড়ি থেকে দিনারটি শেষ বের হয়েছে, সেখানেই আসবে,এজন্য ঘর বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে! দ্বিতীয় শর্ত, তিন নদীর মোহনা থেকে পানি দিয়ে ঘর লেপতে হবে!আমাদের ঘর এখনকার মতো বিল্লিং ছিলো না, তখন মাটির ঘরে থাকতাম আমরা ,সেটাও ওই পানি দিয়ে লেপে নতুন করা হলো!এভাবেই ভাইজান তুমুল আয়োজনে সব করতে লাগলেন! আর আমরা বলতে লাগলাম, যেটা হারায় গেছে, সেটা আবার এভাবে পাওয়া যায় নাকি??!!!



0
0
0.000
2 comments
avatar

Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You received more than 600 upvotes.
Your next target is to reach 700 upvotes.

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

Check out the last post from @hivebuzz:

A successful meetup and its commemorative badge
0
0
0.000