শেষ বিকেলে কাশফুলের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া

avatar

মানুষ মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারী। একটু সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ,আমরা কত কিছুই না করি। মাঝেমধ্যে সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আমরা দূর দূরান্তে ভ্রমণ করি।
20201002_170413.jpg

20201002_170557.jpg
20201002_170516.jpg

সত্যিকার অর্থে আমরা ইট পাথরের শহরে আবদ্ধ হয়ে, নিজের মনকে পাথর করে ফেলেছি। মাঝে মধ্যে নিজেকে জেলখানার কয়েদি মনে হয়। আবার করোনাভাইরাস মহামারী। তাই সুযোগ পেলেই মনে চায়, এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তাই মনের খোরাক দেওয়ার জন্য বেরিয়ে গেলাম ।বিকেলবেলা কাশফুল দেখার উদ্দেশ্যে।
20201002_170449.jpg

বর্তমানে চলছে শরৎকাল। শরৎকাল মানেই মাঠের এদিক সেদিক কাশফুলের ছড়াছড়ি। কাশফুলের শুভ্রতা আমাদের যেন ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে দেয় শরৎকাল এর আগমন। শুভ্র কাশফুল আর আকাশের সাদা মেঘ ,এই দুইয়ের মিলন যেন মনকে আনন্দে মাতাল করে তোলে। কাশফুল আর আকাশের রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে উঠে পথিকের মন। কাশফুল দেখলে কেউই লোভ সামলাতে পারেন না। তাইতো অনেক পথিক কাশফুল দেখে নিজের মোবাইল হাতে নিয়ে ক্যামেরাবন্দি করেন কিছু মুহূর্ত।
20201002_170433.jpg

কিছুদিন ধরে বাসায় থাকতে থাকতে খুবই বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম বিকেলবেলা কাশফুলের বনে ঘুরে আসার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকেলবেলা বেরিয়ে পড়লাম। বাসা থেকে 10 মিনিট হাঁটার পর, আমি আমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে দেখি , অনেকেই আমার মত কাশ ফুলের সৌন্দর্য দেখার জন্য এসেছেন। সবাই যার যার মতো ব্যস্ত কাশফুলের সাথে সেলফি তোলার জন্য। আমার পাশের গ্রামেই রাস্তার ধারে ফুটে আছে প্রকৃতির সুন্দর এই ফুল। আকাশের সাদা মেঘ আর কাশফুলের রঙ যেন দুটি একসাথে মিলে একাকার হয়ে গেছে। এই দৃশ্য দেখে খুবই মুগ্ধ হলাম।মনটা আনন্দে ভরে উঠলো,সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল।
20201002_170544.jpg

সন্ধ্যা হবার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলাম। যতক্ষণ কাশফুলের রাজ্যে অবস্থান করছিলাম, ততক্ষণ যেন মানসিক অবসাদ আর যন্ত্রণা নামক শব্দ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। সে অন্যরকম এক অনুভূতি! তারমধ্যে একটি ঘটনা ঘটল , আমি যখন কয়েকটি সেলফি নিয়ে ছিলাম তখন।
20201002_170547.jpg

রাস্তার পাশেই একটি বড় পুকুর ,পুকুরের পাশে বাড়ি ।সেখানে দুটি মেয়ে বসে ছিলো। আমার সেলফি তোলা দেখে ,তারা জোরে জোরে আওয়াজ করে গান গাচ্ছিলো এবং বলছিল সেলফি ,হায় সেলফি। আমরাও সেলফি তুলব। তারা হাত দিয়ে মিছে অভিনয় করছিল সেলফি তোলার। পড়ে চোখে চোখ পড়তেই ওরা দৌড়ে পালিয়ে গেল। সম্ভবত মেয়েগুলো পরে আমাকে চিনতে পেরেছিল ,তার কারণ হচ্ছে মেয়েগুলো আমাদের গ্রামেরই।
20201002_170455.jpg

যাইহোক কিছুক্ষণ পর যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল তখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এটি সত্যিই খুব আনন্দদায়ক ছিল আমার কাছে। কারণ বাড়ির কাছে ছোট এই ভ্রমণ টি, আমাকে যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছিলো। সারাদিন বাসায় বসে থাকতে থাকতে মন এবং শরীর দুটোই সম্পূর্ণই ক্লান্ত। তাই মাঝে মধ্যে মনে প্রকৃতির একটু ছোঁয়া পেতে চায়। আর সেই ছোঁয়া পেলেই মনের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়।

তাই সবার উদ্দেশ্যে বলব, যারা কাজ করতে করতে ক্লান্ত কিংবা বাসায় বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত, তারা একটু সময় নিয়ে আশেপাশে প্রকৃতিকে দেখে আসতে পারেন। এটি আমাদের ক্লান্তি দূর করে মনকে চাঙ্গা করে তোলে। আর মন চাঙ্গা থাকা মানে দেহের সুস্থতা। মন ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকে। তাই সময় পেলেই ঘুরে আসুন আশেপাশে প্রকৃতি দেখার জন্য।

ধন্যবাদ সকলকে। সৃষ্টিকর্তা সকলকে ভাল রাখুক ,এই কামনাই করি।



0
0
0.000
0 comments