অপুর বিকালবেলা

avatar


জীবনের প্রতিটি দিন এক রকম হয় না, কখনো দিনটা ভালো শুরু হয় আবার শেষটা হয় মন্দ, কখনো আবার খারাপ দিয়ে শুরু হয়ে শেষটা হয় ভালো দিয়ে, এইতো জীবন ভালোখারাপের ঢেউ এ নিরন্তর ছুটে ছলছে। এই পৃথিবীতে কেউ আজীবন সুখে কিংবা দুঃখ থাকতে পারে না। লাইফে এমন কিছু সময় আসবে যখন সবকিছু অঅন্ধকার মনে হবে আবার এমনও হবে জীবনটা আনন্দে ভরে উটবে। শেক্সপিয়ারের একটি আমার খুব পছন্দ তা হলো,

পুরো দুনিয়াটাই একটা রঙ্গমঞ্চ আর প্রতিটি নারী ও পুরুষ সেই মঞ্চের অভিনেতা; এ মঞ্চে প্রবেশপথও আছে আবার বহির্গমন পথও আছে, জীবনে একজন মানুষ এই মঞ্চে অসংখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন।
--শেক্সপিয়ার

দিনটি ছিল ১২-ই ফাল্গুন, অপুর জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। অপু এইতো কদিন হলো নতুন বিয়ে করেছে, বহুদিন পর সে আজ সে তার স্ত্রী কে নিয়ে ঘুরতে বের হবে। শুধু স্ত্রী বললে ভুল হবে ভালোবাসার প্রিয় মানুষটি। তারা দুজন দুজনকে প্রচণ্ড পছন্দ করে, মনে মনে দুজন দুজনকে কিভাবে ভালোবেসে ফেলেছে তারা নিজেরাও মাঝে মাঝে অবাক হয়, এইতো সেইদিন না অপু তার বাবা মাকে নিয়ে তমাকে দেখতে এসেছিল, ও বলা হয়নি আপুর ভালবাসার মানুষটির নাম তমা। হে সেদিন প্রথম দেখাতেই অপু তমাকে ভালবেসে ফেলেছিল। অপু মনে মনে বলেছিল বিয়ে যদি করি তাহলে একেই করব। তমাও প্রথম দেখতেই এক অন্যরকম লেগেছিল অপুকে।

দেখতে দেখতে মাস পেরল, অপু ও তমার বিয়ে হয়েছে, আজ তারা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ। অপু বিয়ের পর একটিবারও তমাকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয়নি, অফিসের কাজের ব্যাস্ততা এরই মধ্যে করনা পরিস্তিথি সবমিলিয়ে অসম্ভব ছিল। হঠাত আপু তার এক বন্ধুর বিয়েতে দাওয়াত পেল। বহুদিন পেরল দেশের পরিস্তিথি এখন অনেকটাই ভাল, এদিকে অপুর অফিসের কাজের চাপও কম, তাই সে দেরি করল না তমাকে ফোনে সব জানাল, তমাও খুব খুশি, খবরটা শুনে তমার চোখ দুটো খুশিতে জলজল করে উটল।

১১-ই ফাল্গুন, রাত ১০:৩০ টা অপু আগামীকাল তমার সাথে দেখা হবে এটা ভেবেই অদ্ভুত এক আনমনা কাজ করছে। সে হঠাতই কি ভেবে তমাকে ফোন দিল, দুজন কথা বলছে তো বলছে, অপু তমাকে বলল শোন কাল কিন্তু তুমি একটু আগেই রেডি হয়ে থেকো, প্রোগ্রাম সন্ধাই, আমরা বিকালে বের হব, সারাটা বিকেল দুজন ঘুরব, তারপর প্রোগ্রামে যাব। তমা বলল আচ্ছা তুমি সময়মত চলে এসো, এই বলে দুজন ফোন রেখেদিল। অপুর মনটা কেন যেন ছটফট করছিল, ঘুমও আসছিল না, এরকম কিছুসময় চলল, তারপর কখন ঘুমিয়েছে সে নিজেও জানেনা।

১২-ই ফাল্গুন, বিকাল ৪:০০ টা অপু তমাকে নিতে যথা সময়ে পৌছে অপেক্ষা করছে তমার জন্য, এদিকে তমা রেডি হয়েছে অনেক আগেই কিন্তু সেও বাবার জন্য অপেক্ষা করছে। তমার বাবা নামাজ পড়ে বাসাই আসল, তমা বাবার কাছে গেল বলল, বাবা আসি তমার বাবা কিছুখন তমার দিকে তাকিয়ে ছিল, তারপর তমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, আচ্ছা মা সাবধানে যাও। অপুও তমার বাবা মার কাছ থেকে বিদায় নিল।

দুজন রিক্সাই করে ঘুরেবেড়াই সারাটা বিকেল। তমা আজ খুব খুশি অপুকে কাছে পেয়ে। শেষ বিকেলে দুজন এক লেকের পাড়ে বসে অনেকক্ষণ গল্প করে, তোমাকে মন খুলে অপুর সাথে গল্প করে। আজ তমাকে বারবার দেখে আর বলে হে আমি তাহাকে পাহিয়াছি, অপুর মনটা মানতেই চাই এই মহিয়সীকে পয়েছে। অপুও আজ তমাকে পেয়ে সবকিছু ভুলে যায়, দুজন মনের আনন্দে ঘুরে বেরাই। অপু হঠাত খেয়াল করে তমাও অপুর দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে, অপু বলে কি দেখছো? তমা বলে তোমার চুলগুলো, চুলগুলো অনেক ঘন, এই বলে তমা অপুর চুলে হাত বুলাই, অপু ক্ষণিকের জন্য চোখ বন্ধ করে আর হারিয়ে ফেলে নিজেকে এক আজানা দেশে। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি।

_____অসমাপ্ত____



0
0
0.000
2 comments