জাদুঘরে জাতির ঐতিহ্য
ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার জয়পুর গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী দিপা।তার বাবা একজন শিক্ষক। দিপার পরিবারে তার দাদা-দাদীও বসবাস করে। দিপার বড় কাকা ঢাকায় থাকেন৷ তিনি একজন ব্যবসায়ী। দিপার সাথে তার দাদুর খুব ভাব৷ রাতে স্কুলের পড়া শেষ করে সে তার দাদুর সাথে গল্প করে। রুপকথার গল্প, ঐতিহাসিক কাহিনী, রহস্যময় গল্প এসব সে তার দাদুর কাছ থেকে শুনে। এ বছর দিপা ও তার বাবার স্কুলের অবকাশ অন্য বছরের তুলনায় দু'দিন বেশি দিল। দিপা রাতের খাবারের পর তার বাবা-মা, দাদা-দাদীকে বলল এবারের গ্রীষ্মের ছুটি কিভাবে কাটানো যায়।এমন সময় তার বড় কাকা ঢাকা থেকে ফোন করে বলল এবারের ছুটি তাদের ঢাকায় কাটাতে। দিপার বাবা-মাও এতে রাজি হল এবং দিপাও খুশিতে আত্মহারা। পরদিন সকালে তারা সপরিবারে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হল।
ঢাকায় দিপার কাকার বাসায় পৌছাতে প্রায় দুপুর হল। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে তারা বিশ্রাম নিল। রাতের খাবারের পর দিপা তার সমবয়সী চাচাতো-বোন রিপার সাথে কথা বলছিল। তখন তার কাকা সবাইকে ডেকে বলল জাতীয় জাদুঘরে যাওয়ার কথা। জাদুঘরে যাওয়ার কথা শুনে সবাই খুশি হল। পরের দিন সকালের নাস্তা করে সবাই জাদুঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।
দিপার বাবা ও কাকা জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশের জন্য টিকিট সংগ্রহ করতে গেলেন। জাদুঘরের সামনে ছোট ছোট উদ্যানগুলোর দিকে দিপা মুগ্ধ দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। টিকিট নিয়ে আসার পর তারা সবাই জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশ করল। দিপার কাকা সবাইকে একে একে সবগুলো সংগ্রহশালা দেখাতে লাগল। তারা সেখানে কাচের গ্লাসের ভিতরে সুন্দরবনের কিছু প্রাণীর ভাস্কর্য দেখল। ভাস্কর্য দেখার পর তার কাকা বলল এই জাদুঘরটি আট একর জায়গার উপর অবস্থিত এবং তা লর্ড কারমাইকেল প্রতিষ্ঠা করেন। দিপা ও রিপা সামনে এগিয়ে প্রাচীন যুগের ও মধ্য যুগের কিছু নিদর্শন দেখতে পেল।সেখানে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় মুদ্রণ, শিলালিপি, বাংলা ও আরবি ভাষার পান্ডুলিপি ও পোড়ামাটির ফলকের কিছু নিদর্শন দেখতে পেল।
কিছু কিছু নিদর্শন থেকে অতীতে বাঙালির জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এদেশের চারু ও কারুশিল্পের নিদর্শন রয়েছে জাদুঘরে। দেখতে দেখতে হঠাৎ দিপার চোখ পড়ল কিছু ছবির উপর। দিপার কাকা বলল এগুলো মুক্তিযুদ্ধের ছবি। সে সেখানে বীর বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের কিছু ছবি দেখল। বাঙালির হত্যার ছবি, মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র ও মানচিত্রে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টর দেখল। দেখে এদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক নতুন কিছু জানতে পারল। হঠাৎ রিপা বঙ্গবন্ধুর কিছু ছবি দেখতে পেল।সেখানে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত কিছু জিনিসও তারা দেখতে পেল।
জাদুঘরে এসব নিদর্শন দেখে রিপা ও দিপা উভয়েরই বিস্মিত হল। দিপার বাবা বলল," জাদুঘর একটি জাতির অতীত ও বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। একটি জাতির জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে। এতে জাতির ঐতিহ্যের নিদর্শন থাকে যা নতুন প্রজন্মকে তাদের অতীত সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।"
জাদুঘর প্রদর্শন শেষ করে তারা সবাই একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে বাসায় চলে আসল। তারপর সে কিছুদিন তার কাকার বাসায় থাকল। গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হলে তারা গ্রামে চলে আসল। সে তার বাবাকে বলল," এবারের গ্রীষ্মের ছুটিতে জাদুঘরে বেড়াতে যাওয়া অনেক আনন্দদায়ক ছিল। এতে সে বাঙালির অতীত সম্পর্কে অনেক নতুন কিছু জানতে পারল।
Congratulations @riazud! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Hi @riazud, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @linco!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON